HMPV ভাইরাস (Human Metapneumovirus) শ্বাসতন্ত্রে আক্রমণকারী একটি ভাইরাস যা শিশু, বয়স্ক এবং দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করে।
ইতিমধ্যে বাংলাদেশে এই ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে।
নিচে এর উৎপত্তি, কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকারের বিস্তারিত দেওয়া হলো:
☑️উৎপত্তি
HMPV ভাইরাসটি প্রথম ২০০১ সালে নেদারল্যান্ডসে আবিষ্কৃত হয়। এটি Paramyxoviridae পরিবারভুক্ত একটি RNA ভাইরাস এবং শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন সংক্রমণ ঘটায়। গবেষণায় দেখা গেছে, এটি মানবদেহে দীর্ঘদিন ধরে উপস্থিত এবং বিভিন্ন ঋতুতে প্রাদুর্ভাব ঘটিয়ে থাকে।
☑️কারণ
1. ভাইরাসের সংক্রমণ:
এই ভাইরাস হাঁচি, কাশি, বা সংক্রমিত ব্যক্তির সঙ্গে সরাসরি সংস্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায়।
ভাইরাসযুক্ত পৃষ্ঠ স্পর্শ করার পর চোখ, নাক বা মুখ স্পর্শ করলে এটি শরীরে প্রবেশ করতে পারে।
2. ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠী:
শিশু, বয়স্ক, এবং যারা দীর্ঘস্থায়ী রোগে ভুগছেন, তারা HMPV দ্বারা সহজে আক্রান্ত হন।
3. অপরিচ্ছন্নতা:
হাত পরিষ্কার না রাখা এবং সঠিক স্বাস্থ্যবিধি না মানা এই ভাইরাসের বিস্তারকে ত্বরান্বিত করে।
☑️লক্ষণ
HMPV-এর লক্ষণগুলো সাধারণ ঠান্ডা-জ্বর থেকে শুরু করে তীব্র শ্বাসতন্ত্রের সমস্যায় রূপ নিতে পারে। যেমন:
1. প্রাথমিক লক্ষণ:
সর্দি, হাঁচি, কাশি
জ্বর
গলা ব্যথা
নাক বন্ধ বা নাক দিয়ে পানি পড়া
2. তীব্র লক্ষণ:
শ্বাসকষ্ট
দ্রুত শ্বাস নেওয়া
বুকে ব্যথা
শিশুদের ক্ষেত্রে কান্নাকাটি এবং খাওয়ার অক্ষমতা
ফুসফুসে সংক্রমণ বা নিউমোনিয়া
☑️প্রতিকার
HMPV ভাইরাসের কোনো নির্দিষ্ট ওষুধ বা ভ্যাকসিন নেই, তবে লক্ষণ উপশমের জন্য কিছু প্রতিকার নেওয়া যেতে পারে:
1. ঘরোয়া প্রতিকার:
পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া।
গরম পানি বা ভেষজ চা পান করা।
গরম পানির ভাপ নেওয়া।
2. প্রাথমিক ওষুধ:
জ্বর ও ব্যথা কমানোর জন্য প্যারাসিটামল ব্যবহার করা।
3. ডাক্তারি পরামর্শ:
যদি শ্বাসকষ্ট বা নিউমোনিয়া হয়, দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
হাসপাতালে অক্সিজেন সাপোর্টের প্রয়োজন হতে পারে।
4. প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা:
# হাত ধোয়া এবং পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা।
# ভিড় এড়ানো
# মাস্ক পরা।
# অসুস্থ ব্যক্তির কাছ থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকা।
☑️উপসংহার
HMPV ভাইরাস সাধারণত স্বল্পমেয়াদী এবং গুরুতর সমস্যার কারণ হয় না। তবে ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীকে সুরক্ষিত রাখতে সতর্কতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি।
স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলুন, সেবা নিয়ে সুস্থ থাকুন।
প্রচারেঃ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স,আড়াইহাজার, নারায়ণগঞ্জ।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস